ব্যায়ামকে কীভাবে নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করবেন

শরীর ও মন সুস্থ রাখতে ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। এটা আমাদের মন ভালো রাখে ও মানসিক উদ্বেগ কমায়। সেই সঙ্গে শরীরকেও রাখে চাঙা। ঘুম ভালো হয়। কমিয়ে দেয় ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদির ঝুঁকি। এত ভালো দিক থাকার পরও মানুষ নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারে না। প্রতিদিনই এ নিয়ে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়। জেনে নিন কীভাবে এই যুদ্ধ জয় করে ব্যায়ামে দিন দিন আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারবেন।

নিজেকে ব্যায়ামে অভ্যস্ত করে নিন। সেজন্য একটা রুটিন বানিয়ে ফেলুন। সেটা নিয়মিত অনুসরণ করুন। অবশ্য বলা সহজ হলেও এটা করা বেশ কঠিন। তাই ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। সেগুলো পূরণের জন্য নিজেকে নিজেই পুরস্কৃত করুন। ধরুন, প্রথম লক্ষ্য স্থির করলেন টানা সাত দিন ব্যায়াম। সেটা পূরণ হলে নিজেকেই কিছু কিনে দিন।

অল্প থেকে শুরু করুন

ব্যায়াম করার সময় অনেকেরই লক্ষ্য থাকে কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে ক্লান্ত করে তোলা। তাতে দোষ নেই। তবে তা জরুরি নয়। প্রতিদিন আধা ঘণ্টা ব্যায়ামই যথেষ্ট। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাপ্তাহিক প্রয়োজনীয় ব্যায়ামের পরিমাণ ১৫০ মিনিট। সে হিসেবে আধা ঘণ্টাও নয়, দৈনিক ব্যায়ামের প্রয়োজন ২০ মিনিটের একটু বেশি। তাই বড় লক্ষ্য স্থির না করে অল্প করে ব্যায়াম শুরু করুন।

প্রিয় অভ্যাসের সঙ্গে ব্যায়ামকে জুড়ে দিন

ধরুন, আপনার সকাল সকাল গান শোনার অভ্যাস আছে। কিংবা চা খাওয়ার। গান শুনতে শুনতে বা চায়ের পানি গরম হওয়ার সময়টায় খানিক ব্যায়াম করে নিন। এভাবে বিদ্যমান প্রিয় কোনো অভ্যাসের (গান শোনা) সঙ্গে নতুন অভ্যাস (ব্যায়াম) জুড়ে দেওয়াকে বলে হ্যাবিট স্ট্যাক। দিনের অনেক অভ্যাসের সঙ্গেই এভাবে আপনি ব্যায়ামকে জুড়ে দিতে পারেন।

এছাড়াও পড়ুন  ওয়েন্ডি'স থেকে ক্রিস্পি ক্রেম পর্যন্ত, এখানে সেরা লিপ ডে ডিল এবং ফ্রিবি রয়েছে৷

অফিসে সময় বের করুন

অফিসের বা কাজের সময়টায় আমাদের বসেই থাকতে হয়। পুরো সময়টা টানা বসে না থেকে মাঝে কিছু সময় বের করুন। হতে পারে সেটা দুপুরে খাবার বিরতি। রোজায় হয়তো সে সুযোগ নেই। তবে কাজের ফাঁকে বা মিটিংয়ের আগে-পরে খানিকটা সময় হেঁটে নিন। চেষ্টা করুন যত বেশি সম্ভব মুখোমুখি মিটিং করতে। তাহলে যেমন যোগাযোগ ভালো হবে, আপনাকে চলাফেরাও করতে হবে।

পছন্দের ব্যায়াম করুন

শত চেষ্টাতেও যদি ব্যায়াম ভালো না লাগে, বুঝবেন আপনি ভুল ব্যায়াম করছেন। খুঁজে বের করুন কোন ধরনের ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে। সেগুলোতেই মনোযোগ দিন। এমনকি তা হতে পারে সাইকেল চালানো, হাইকিং, যোগ, দৌড় বা স্রেফ হাঁটা। মনে রাখবেন, আপনি যখন পছন্দের ব্যায়াম করবেন, কেবল তখনই তা উপভোগ করতে পারবেন।

টিভি ও ব্যায়াম সংযুক্ত করুন

আমাদের দিনের একটা বড় সময় পার হয় টিভি দেখে। অফিস বা কাজের বাইরে টিভি দেখার সময়েই শরীর সবচেয়ে দীর্ঘক্ষণ নিশ্চল বসে থাকে। টিভি দেখা বাদ দেওয়ার দরকার নেই। তবে সময়টাতে শরীরকে বসিয়ে না রেখে ব্যায়াম করুন। কিংবা ট্রেডমিলে দৌড়ান। তাতে ব্যায়াম করাতেও যেমন বৈচিত্র্য আসবে, টিভি দেখার সময়টাতেও শরীর অলস থাকবে না।

ব্যায়ামের সঙ্গী খুঁজে নিন

কোনো কাজই একা করে মজা নেই। ব্যায়ামও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই খুঁজে নিন আপনার শরীরচর্চার সঙ্গী। সেটা হতে পারে আপনার জীবনসঙ্গী। কিংবা ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তেমন কেউ না থাকলে এ ধরনের কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। দলগতভাবে ব্যায়াম করলে যেমন একঘেয়ে ভাব কমবে, সেই সঙ্গে নিজেদের মধ্যে তৈরি হবে সুস্থ প্রতিযোগিতার আবহ।